Rabindra Sangeet Albums. Sung by the verified singers of this website. 160 talented singers & over 850 songs.
Rabindra Sangeet Collections. Sung by the verified singers of this website. Nearly 500 unique Tagore songs.
Detail information about Rabindra Sangeet. All the lyrics, notations, background history with detail musical compositions, English translation and many more.
একদল ফুলওয়ালি চলেছে ফুল বিক্রি করতে
ফুলওয়ালির দল । নব বসন্তের দানের ডালি এনেছি তোদেরি দ্বারে, আয় আয় আয়, পরিবি গলার হারে । লতার বাঁধন হারায়ে মাধবী মরিছে কেঁদে— বেণীর বাঁধনে রাখিবি বেঁধে, অলকদোলায় দুলাবি তারে, আয় আয় আয় । বনমাধুরী করিবি চুরি আপন নবীন মাধুরীতে— সোহিনী রাগিণী জাগাবে সে তোদের দেহের বীণার তারে তারে, আয় আয় আয় ॥
আমার মালার ফুলের দলে আছে লেখা বসন্তের মন্ত্রলিপি । এর মাধুর্যে আছে যৌবনের আমন্ত্রণ । সাহানা রাগিণী এর রাঙা রঙে রঞ্জিত, মধুকরের ক্ষুধা অশ্রুত ছন্দে গন্ধে তার গুঞ্জরে । আন্ গো ডালা, গাঁথ্ গো মালা, আন্ মাধবী মালতী অশোকমঞ্জরী, আয় তোরা আয় । আন্ করবী রঙ্গন কাঞ্চন রজনীগন্ধা প্রফুল্ল মল্লিকা, আয় তোরা আয় । মালা পর্ গো মালা পর্ সুন্দরী, ত্বরা কর্ গো ত্বরা কর্ । আজি পূর্ণিমা রাতে জাগিছে চন্দ্রমা, বকুলকুঞ্জ দক্ষিণবাতাসে দুলিছে কাঁপিছে থরথর মৃদু মর্মরি । নৃত্যপরা বনাঙ্গনা বনাঙ্গনে সঞ্চরে, চঞ্চলিত চরণ ঘেরি মঞ্জীর তার গুঞ্জরে । দিস নে মধুরাতি বৃথা বহিয়ে উদাসিনী, হায় রে । শুভলগন গেলে চলে ফিরে দেবে না ধরা, সুধাপসরা ধুলায় দেবে শূন্য করি, শুকাবে বঞ্জুলমঞ্জরী । চন্দ্রকরে অভিষিক্ত নিশীথে ঝিল্লিমুখর বনছায়ে তন্দ্রাহারা পিক-বিরহকাকলি-কূজিত দক্ষিণবায়ে মালঞ্চ মোর ভরল ফুলে ফুলে ফুলে গো, কিংশুকশাখা চঞ্চল হল দুলে দুলে গো ॥
প্রকৃতি ফুল চাইতেই তাকে ঘৃণা করে চলে গেল
দইওয়ালার প্রবেশ
দইওয়ালা । দই চাই গো, দই চাই, দই চাই গো? শ্যামলী আমার গাই, তুলনা তাহার নাই । কঙ্কনানদীর ধারে ভোরবেলা নিয়ে যাই তারে— দূর্বাদলঘন মাঠে নদীর ধারে ধারে, তারে সারা বেলা চরাই, চরাই গো । দেহখানি তার চিক্কণ কালো, যত দেখি তত লাগে ভালো । কাছে বসে যাই ব'কে, উত্তর দেয় সে চোখে, পিঠে মোর রাখে মাথা— গায়ে তার হাত বুলাই, হাত বুলাই গো ॥
চণ্ডালকন্যা প্রকৃতি দই কিনতে চাইল
একজন মেয়ে সাবধান করে দিল
মেয়ে । ওকে ছুঁয়ো না, ছুঁয়ো না, ছি, ও যে চণ্ডালিনীর ঝি— নষ্ট হবে যে দই সে কথা জান' না কি ॥
দইওয়ালার প্রস্থান
চুড়িওয়ালার প্রবেশ
চুড়িওয়ালা । ওগো তোমরা যত পাড়ার মেয়ে, এসো এসো দেখো চেয়ে, এনেছি কাঁকনজোড়া সোনালি তারে মোড়া । আমার কথা শোনো, হাতে লহো প'রে, যারে রাখিতে চাহ ধ'রে কাঁকন দুটি বেড়ি হয়ে বাঁধিবে মন তাহার— আমি দিলাম কয়ে ॥
প্রকৃতি চুড়ি নিতে হাত বাড়াতেই
মেয়েরা । ওকে ছুঁয়ো না, ছুঁয়ো না, ছি, ও যে চণ্ডালিনীর ঝি ॥
চুড়িওয়ালা প্রভৃতির প্রস্থান
প্রকৃতি । যে আমারে পাঠাল এই অপমানের অন্ধকারে পূজিব না, পূজিব না সেই দেবতারে পূজিব না । কেন দেব ফুল, কেন দেব ফুল, কেন দেব ফুল আমি তারে— যে আমারে চিরজীবন রেখে দিল এই ধিক্কারে । জানি না হায় রে কী দুরাশায় রে পূজাদীপ জ্বালি মন্দিরদ্বারে । আলো তার নিল হরিয়া দেবতা ছলনা করিয়া, আঁধারে রাখিল আমারে ॥
পথ বেয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুগণ
ভিক্ষুগণ । যো সন্নিসিন্নো বরবোধিমূলে, মারস্স সেনং মহতিং বিজেত্বা সম্বোধি মাগঞ্ছি অনন্তঞ্ঞাণো লোকুত্তমো তং পণমামি বুদ্ধং ॥
প্রস্থান
প্রকৃতির মা মায়ার প্রবেশ
মা । কী যে ভাবিস তুই অন্যমনে নিষ্কারণে— বেলা বহে যায়, বেলা বহে যায় যে । রাজবাড়িতে ঐ বাজে ঘণ্টা ঢং ঢং ঢং, ঢং ঢং ঢং— বেলা বহে যায় । রৌদ্র হয়েছে অতি তিখনো তোর আঙিনা হয় নি যে নিকোনো, তোলা হল না জল, পাড়া হল না ফল । কখন্ বা চুলো তুই ধরাবি । কখন্ ছাগল তুই চরাবি । ত্বরা কর্, ত্বরা কর্, ত্বরা কর্— জল তুলে নিয়ে তুই চল্ ঘর । রাজবাড়িতে ওই বাজে ঘণ্টা ঢং ঢং ঢং, ঢং ঢং ঢং— ওই-যে বেলা বহে যায় ॥
প্রকৃতি । কাজ নেই, কাজ নেই মা, কাজ নেই মোর ঘরকন্নায় । যাক ভেসে যাক যাক ভেসে সব বন্যায় । জন্ম কেন দিলি মোরে, লাঞ্ছনা জীবন ভ'রে— মা হয়ে আনিলি এই অভিশাপ ! কার কাছে বল্ করেছি কোন্ পাপ, বিনা অপরাধে একি ঘোর অন্যায় ॥
মা । থাক্ তবে থাক্ তুই পড়ে, মিথ্যা কান্না কাঁদ্ তুই মিথ্যা দুঃখ গ'ড়ে ॥
প্রস্থান
প্রকৃতির জল তোলা
বুদ্ধশিষ্য আনন্দের প্রবেশ
আনন্দ । জল দাও, আমায় জল দাও । রৌদ্র প্রখরতর, পথ সুদীর্ঘ, আমায় জল দাও । আমি তাপিত পিপাসিত, আমায় জল দাও । আমি শ্রান্ত, আমায় জল দাও ॥
প্রকৃতি । ক্ষমা করো প্রভু, ক্ষমা করো মোরে— আমি চণ্ডালের কন্যা, মোর কূপের বারি অশুচি । তোমারে দেব জল হেন পুণ্যের আমি নহি অধিকারিণী, আমি চণ্ডালের কন্যা ॥
আনন্দ । যে মানব আমি সেই মানব তুমি কন্যা । সেই বারি তীর্থবারি যাহা তৃপ্ত করে তৃষিতেরে, যাহা তাপিত শ্রান্তেরে স্নিগ্ধ করে সেই তো পবিত্র বারি । জল দাও আমায় জল দাও ।
জল দান
কল্যাণ হোক তব কল্যাণী ॥
প্রস্থান
প্রকৃতি । শুধু একটি গণ্ডূষ জল, আহা নিলেন তাঁহার করপুটের কমলকলিকায় । আমার কূপ যে হল অকূল সমুদ্র— এই-যে নাচে এই-যে নাচে তরঙ্গ তাহার, আমার জীবন জুড়ে নাচে— টলোমলো করে আমার প্রাণ, আমার জীবন জুড়ে নাচে । ওগো, কী আনন্দ, কী আনন্দ, কী পরমমুক্তি ! একটি গণ্ডূষ জল— আমার জন্মজন্মান্তরের কালি ধুয়ে দিল গো শুধু একটি গণ্ডূষ জল ॥
মেয়ে-পুরুষের প্রবেশ
ফসল কাটার আহ্বান-গান
মাটি তোদের ডাক দিয়েছে— আয় রে চলে আয় আয় আয় । ডালা যে তার ভরেছে আজ পাকা ফসলে— মরি হায় হায় হায় । হাওয়ার নেশায় উঠল মেতে, দিগ্বধূরা ফসল-ক্ষেতে, রোদের সোনা ছড়িয়ে পড়ে ধরার আঁচলে— মরি হায় হায় হায় । মাঠের বাঁশি শুনে শুনে আকাশ খুশি হল । ঘরেতে আজ কে রবে গো, খোলো দুয়ার খোলো । আলোর হাসি উঠল জেগে, পাতায় পাতায় চমক লেগে বনের খুশি ধরে না গো, ওই যে উথলে— মরি হায় হায় হায় ॥
প্রকৃতি । ওগো, ডেকো না মোরে ডেকো না । আমার কাজ-ভোলা মন, আছে দূরে কোন্— করে স্বপনের সাধনা । ধরা দেবে না অধরা ছায়া, রচি গেছে মনে মোহিনী মায়া— জানি না এ কী দেবতারি দয়া, জানি না এ কী ছলনা । আঁধার অঙ্গনে প্রদীপ জ্বালি নি, দগ্ধ কাননের আমি যে মালিনী, শূন্য হাতে আমি কাঙালিনী করি নিশিদিনযাপনা । যদি সে আসে তার চরণছায়ে বেদনা আমার দিব বিছায়ে, জানাব তাহারে অশ্রুসিক্ত রিক্ত জীবনের কামনা ॥
Visit the following links for detail information. More will come soon.